বাসক পাতার উপকারিতা ও অপকারিতা এবং পুষ্টিগুণ
বাসক পাতার উপকারিতা সম্পর্কে জানতে চাচ্ছেন? বাসক পাতা কি কি রোগ নিরাময় করতে
সাহায্য করে তা কি জানেন? তাহলে চলুন বিস্তারিতভাবে জেনে আসি বাসক পাতার উপকারিতা
সম্পর্কে। আজকের আর্টিকেলে আরো জানবো লাল বাসক পাতার উপকারিতা সম্পর্কে।
বাসক পাতা এমন একটি ঔষধি গুনাগুন সম্পন্ন উদ্ভিদ। যা মানব দেহের বিভিন্ন রোগের
উপশম হিসেবে কাজ করে। আদিকাল থেকেই জ্বর সর্দি কাশি ইত্যাদি রোগের ওষুধ হিসেবে
বাসক পাতার ব্যবহার হয়ে আসছে। চলুন আজকের আর্টিকেলে বাসক পাতার উপকারিতা
সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নেই।
বাসক পাতা সম্পর্কে কিছু অজানা তথ্য
বাসক পাতা এক ভারত উপমহাদেশীয় ভেষজ উদ্ভিদ। বৈজ্ঞানিকভাবে এই বাসক পাতার নাম
দেওয়া হয়েছে আড়াটোডা বাসিকা। তবে এই গাছটি বিভিন্ন জায়গায় বিভিন্ন নামে
পরিচিত রয়েছে কোন জায়গায় গাছটির নাম বাসনা পাতা, কোন জায়গায় আবার বাকসার
পাতা,তার ব্যবসায়ীভাবে এটি নাম দেওয়া হয়েছে বাসক। বাসক পাতার গাছের সাথে গ্রাম
অঞ্চলের মানুষের গভীর সম্পর্ক রয়েছে।
কেননা গ্রাম অঞ্চলের বিভিন্ন জায়গায় গাছটি পাওয়া যায়। তার গ্রাম অঞ্চলের
মানুষ বিভিন্ন রোগের জন্য এই গাছ ব্যবহার করে থাকেন। শুধু মানুষের জন্যই নয় গরু,
ছাগল, মহিষের বিভিন্ন রোগের জন্যও গ্রামাঞ্চলের মানুষ বাসক পাতা ব্যবহার করে
থাকেন। বাসক পাতার গাছটি প্রায় তিন থেকে পাঁচ ফুট লম্বা হয়ে থাকে। কচি অবস্থায়
গাছের পাতার রং সবুজ হয়ে থাকে।
আরো পড়ুনঃ অড়হর গাছের উপকারিতা সম্পর্কে
উপযুক্ত বয়সে পরিণত হওয়ার পরে হালকা বেগুনি রংয়ের মতো দেখা যায়। বাসক গাছে
সাদা রংয়ের ফুল ফোটে। এবং ফলগুলি হয় প্রায় দেখতে সুপারির মতো এবং পুরো ফল বীজ
দিয়ে ভরপুর থাকে।বাসক পাতা এমন একটি উদ্ভিদ যা শুধু পাতাই নয় বরং বাসক গাছের
মূল, ফুল, ফ, শিকর, সহ পুরো গাছ যেন ঔষধি গুনাগুনে ভরপুর। বর্তমানে আমাদের দেশের
বিভিন্ন জায়গায় বাসক গাছ বাণিজ্যিক হিসেবে চাষাবাদ শুরু করা হয়েছে।
বাসক গাছের উপকারিতা
বাসক পাতা বিভিন্ন ধরনের ভেষজ ঔষধি গুনে গুণান্বিত। আদি যুগ থেকে বাসক পাতার
ব্যবহার হয়ে আসছে বিভিন্ন রোগের জন্য। বৈজ্ঞানিকভাবেও পরীক্ষা করে বাসক গাছের
ঔষধি গুনাগ প্রমাণিত হয়েছে। বাসক গাছের শুকনা অথবা কাঁচা পাতা বহু রোগের ঔষধ
হিসেবে ব্যবহার করা হয়। বর্তমান সময়ে বিভিন্ন কমন ঔষধ কোম্পানি বাসক পাতা কিনে
থাকে।
এর দ্বারা বোঝাই যায় যে বাসক পাতার মধ্যে কি পরিমান ঔষধি গুনাগুন রয়েছে। শরীরের
রোগ ছাড়াও পানির জীবাণুমুক্ত করতে বাসক পাতার ব্যবহার করা হয়। ছোটবেলায় দেখেছি
জ্বর সর্দি-কাশির বা বুকে কফ জমলে দাদা-দাদীরা বাসক পাতার ব্যবহার করত। বাসক পাতা
নিয়ে এসে রস করে খেলে জ্বর ভালো হয়ে যেত এবং সর্দি কাশিসহ কম ভালো হয়ে যেত।
শুধু জ্বর সর্দি কাশির জন্যই নয় বিভিন্ন ধরনের রোগের মা ঔষধ হিসেবে কাজ করে বাসক
পাতা। এবং কি গরুর অথবা সাগরের জ্বর দেখা দিলে আগেকার মুরুব্বিরা গরুকে বাসক পাতা
খাওয়াতেন। যার ফলে খুব সহজেই গরু ছাগল অথবা মহিষের জ্বর ভালো হয়ে যেত। বাসক
পাতার ঔষধি গুনাগুন সম্পর্কে বলতে গেলে সর্বপ্রথম সব থেকে বেশি পাতাগুলোই ব্যবহার
হয়ে থাকে।
এছাড়াও বাসক গাছের মূল শিকড় বিভিন্ন রোগের কাজে লাগে। যেমন জন্ডিস রোগের জন্য
বাসক গাছের প্রচুর উপকার রয়েছে। তাই বাসক গাছের পাতা আমরা নিয়মিত খেতে পারি।
নিয়মিত খাওয়ার ফলে শরীরের বিভিন্ন রোগ থেকে মুক্তি পাওয়া যাবে।
বাসক পাতা কি কি রোগ নিরাময় করে
বর্তমান সময়ে মানুষের শরীরের মধ্যে বিভিন্ন ধরনের রোগ দেখা যায়। বর্তমানে নতুন
নতুন কিছু রোগ উদ্ভাবন হয়েছে। যে রোগের নাম আগে কখনো শোনা যায়নি। এমনো কিছু
নতুন নতুন রোগ সৃষ্টি হয়েছে যে রোগের নাম আগেকার মানুষ কখনো শুনেনি। আর আদি
কালের মানুষ প্রচুর পরিমাণে পরিশ্রম করত। তারপরেও তাদের শরীরে কখনো বড় ধরনের রোগ
দেখা দিত না। কেননা তারা যা খেতো তাজা এবং ফরমালিন মুক্ত খাবার।
বর্তমান আমাদের প্রতিটি খাদ্যের মধ্যে ফরমালিন থাকার কারণে শরীরের মধ্যে বিভিন্ন
ধরনের রোগ দেখা দেয়। এবং আগেকার মানুষ ওষুধের থেকে বাড়ির আশেপাশে যত গাছ-গাছড়া
রয়েছে। ওই সমস্ত গাছ-গাছড়া খেয়েই বিভিন্ন রোগ থেকে নিরাপদ থাকতো। ঐ সমস্ত
ঔষুধি গুনাগুন সম্পূর্ণ গাছের মধ্যে একটি হল বাসক পাতার গাছ। যে গাছ ঔষধি
গুণাগুনে ভরপুর। চলুন এক নজরে দেখে আসি কি কি রোগের জন্য বাসক পাতার গাছ কার্যকরী
ভূমিকা পালন করে।
- সর্দি কাশি কমাতে সাহায্য করে।
- শ্বাসকষ্টের সমস্যা দূর করতে সহায়তা করে।
- জ্বর কমাতে সাহায্য করে।
- যক্ষা রোগের জন্য কার্যকরী ভূমিকা পালন করে।
- বাতের ব্যথা উপশম করে।
- রক্ত পরিষ্কার করতে সাহায্য করে।
- জন্ডিস রোগের জন্য খুব ভালো কাজ করে।
- স্বরভঙ্গ বা গলা ব্যথা দূর করে।
- প্রসাবে জ্বালাপোড়া যন্ত্রণা দূর করে।
- মাংসপেশীর ব্যথা দূর করে।
- খিচুড়ি রোগ দূর করতে সাহায্য করে।
- উকুন দূর করতে সাহায্য করে।
- বসন্ত রোগের সংক্রমণ দূর করে।
- ঋতুস্রাবের সমস্যা দূর করে।
- চুলকানি দূর করতে সাহায্য করে।
- দাঁতের সমস্যা দূর করতে সাহায্য করে।
- ঘামের দুর্গন্ধ দূর করে।
- ত্বক উজ্জল ও ফর্সা করে।
কোন রোগে কিভাবে খেতে হয় বাসক পাতা
ভেষজ যে কোন উদ্ভিদ খাওয়ার পূর্বে অবশ্যই তার নিয়মাবলী ভালোভাবে জেনে নিতে হবে।
আর যদি নিয়ম মেনে না খেতে পারেন তাহলে উপকারের চেয়েও ক্ষতি বেশি হওয়ার
সম্ভাবনা রয়েছে। তাই যেকোনো থেকে ভেষজ উদ্ভিদ খাওয়ার পূর্বে পরিমাণ এবং পার্শ্ব
প্রতিক্রিয়া সম্পর্কে ভালোভাবে জেনে নিবেন। চলুন তাহলে জেনে নেই কোন রোগের জন্য
কিভাবে এবং কতটুকু বাসক পাতা খেতে হয়।
সর্দি কাশিঃ সর্দি কাশি কমাতে বাসক পাতার ব্যবহার অনেক আগে থেকেই হয়ে
আসছে। দীর্ঘদিন যাবৎ সর্দি-কাশি যদি ভালো না হয়। তাহলে বাসক গাছের তিন থেকে
চারটি পাতা ভালোভাবে পরিষ্কার করে বেটে রস করে নিন। এর পরে রস নিয়মিত খেলে সর্দি
কাশি ভালো হয়ে যায়। তবে একটা জিনিস জেনে রাখা ভালো বাসক গাছের পাতার রস প্রচুর
পরিমানে তেতো হয়। তাই রসের সাথে মধু মিশিয়ে খেতে পারেন। মধু মিশিয়ে খেলে আরো
বেশি উপকার পাওয়া যায়।
যক্ষা রোগঃ যক্ষা রোগ থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য বাসক পাতার ব্যবহার করতে
পারেন। কেননা বাসক পাতায় রয়েছে আ্যন্টি-মাইক্রোবাল উপাদান। উপাদান যক্ষা রোগ
কমাতে সাহায্য করে। যক্ষা রোগীদের নিয়মিত বাসক পাতা রস করে খেলে দ্রুত যক্ষা রোগ
থেকে মুক্তি পাওয়া যায়।
জন্ডিসঃ জন্ডিস এমন একটি রোগ যা ধীরে ধীরে লিবারে আক্রমণ করে। আর লিভারে
আক্রমণ করলে ক্যান্সার হওয়ার সম্ভাবনা বেড়ে যায়। তাই জন্ডিস রোগ থেকে মুক্তি
পাওয়ার জন্য বাসক গাছের ফুল রস করে মধু সহ নিয়মিত খেলে লিভার ভালো থাকে এবং
জন্ডিস রোগ থেকে মুক্তি পাওয়া যায়।
রক্ত পরিষ্কারঃ মানুষের রক্ত পরীক্ষা না থাকলে বিভিন্ন ধরনের রোগ দেখা
দেয়। যেমন মুখে ব্রণ হওয়া পেটের সমস্যা এলার্জি জাতীয় বিভিন্ন সমস্যা দেখা
দিতে পারে। রক্ত পরিষ্কার করার জন্য বাসক পাতা নিয়মিত খেতে পারেন। বাসক পাতার রস
নিয়মিত খাওয়ার কারণে রক্ত পরিষ্কার নয় উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করতে সাহায্য
করে এবং রক্তের হিমোগ্লোবিনের মাত্রা বৃদ্ধি করে।
জ্বরঃ দীর্ঘদিন থেকে যারা জ্বরে ভুগতেছেন। অনেক ধরনের ওষুধ খাওয়ার পরেও
জ্বর কমে না। তারা নিয়মিত বাসক পাতার রস খেতে পারেন। বাসক পাতার রসের সাথে এক
চামচ মধু একটা মানুষ তুলসী পাতার রস মিক্স করে খেলে খুব ভালো উপকার পাওয়া যায়।
শ্বাসকষ্টঃ শ্বাসকষ্ট রোগ থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য বাসক পাতা কার্যকরী
ভূমিকা পালন করে। বাসক পাতা নিয়মিত খাওয়ার ফলে শ্বাসনালী প্রশস্ত করে এবং
শ্বাসকষ্ট দূর করে। এবং হাঁপানি রোগীদের জন্য বাসক পাতা বেশ কার্যকরী ভূমিকা পালন
করে। শ্বাসকষ্ট এবং হাঁপানি রোগীদের জন্য নিয়মিত বাসক পাতার রস খাওয়ার পরামর্শ
দেওয়া হল।
স্বরভঙ্গ বা গলা ব্যথাঃ অনেক সময় আমাদের বিভিন্ন কারণে গলা ব্যাথা হয়ে
থাকে। অতিরিক্ত জোরে কথা বলার কারনে অনেক সময় গলার স্বর ভেঙ্গে যায়। এই এ ধরনের
সমস্যায় বাসক পাতার দুই থেকে তিনটি পাতা রস করে খেতে পারলে অনেক উপকার পাওয়া
যায়।
প্রসাবের জ্বালাপোড়াঃ গ্রীষ্মকালে অনেক সময় দেখা যায় মাঝে মাঝে প্রসাবে
জ্বালাপোড়া হয়ে থাকে। প্রসাবের জ্বালাপোড়া দূর করার জন্য বাসক গাছের ফুল বেটে
মিছরির পানির সাথে মিশিয়ে নিয়মিত সকালে খালি পেটে খেলে প্রসাবের জ্বালাপোড়া দূর
হয়ে যায়।
বসন্ত রোগঃ বসন্ত একটি ছোঁয়াচে রোগ বসন্ত রোগের আক্রান্ত থেকে দূরে থাকার
জন্য বাসক গাছের পাতা সিদ্ধ করে নিয়মিত সিদ্ধ করা পানি সেবন করলে বসন্ত রোগের
সংক্রমণের আশঙ্কা থাকেনা।
ঋতুস্রাবঃ বাসক পাতার ব্যবহারে ঋতুস্রাবের বিভিন্ন সমস্যার সমাধান পাওয়া
যায়। অনেকেরই দেখা যায় ঋতুস্রাবের সময় অতিরিক্ত পেটে ব্যথা হয় এবং অনেকের
অতিরিক্ত রক্তপাত হয়। এ ধরনের সমস্যায় নিয়মিত বাসক পাতার রস সেবন করলে এই সমস্ত
সমস্যার দ্রুত সমাধান পাওয়া যায়।
খিচুনি রোগঃ খিচুনি রোগ থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য বাসক পাতার ব্যবহার
অত্যন্ত কার্যকর ভূমিকা পালন করে। খিচুনি রোগে আক্রান্ত রোগ নিয়মিত বাসক পাতার
রস সেবন করলে খিচুনি রোগ থেকে দ্রুত মুক্তি পাওয়া যায়।
বাসক পাতার ব্যবহার বিধি
বাসক পাতা ব্যবহারে বিভিন্ন ধরনের রোগ থেকে মুক্তি পাওয়া যায়। মানব দেহের
বিভিন্ন সমস্যার জন্য বাসক পাতা ব্যবহার হয়ে থাকে। এবং বাসক পাতা ব্যবহারে খুব
ভালো উপকার পাওয়া যায়। চলুন বাসক পাতা ব্যবহারের সঠিক নিয়মাবলী জেনে নেই।
চুলকানিঃ শরীরে চুলকানি অত্যন্ত যন্ত্রণাদায়ক একটি সমস্যা। তাই চুলকানি
দূর করার জন্য বাসক পাতার ব্যবহার করতে পারেন। বাসক পাতার ব্যাপারে চুলকানি
নির্মল হয়ে যায়। বাসক গাছের ১০ থেকে ১২টি কচি পাতা এবং এক টুকরা হলুদ ভালোভাবে
বেটে চুলকানিতে লাগালে কয়েকদিনের মধ্যে চুলকানি নির্মূল হয়ে যাবে।
দাঁতের মাড়ি দিয়ে রক্ত পড়াঃ দাঁতের মাড়ি দিয়ে রক্ত পড়া দূর করার
জন্য। বাসক গাছের ১৫ থেকে ২০টি পাতা থেতিয়ে নিয়ে দুই কাপ পানিতে সিদ্ধ করে
হালকা গরম থাকা অবস্থায় কুলি করলে যাতে আমারে দিয়ে রক্ত পড়া বন্ধ হয়ে যাবে।
বিশুদ্ধ পানিঃ পানির মধ্যে থাকা ব্যাকটেরিয়া দূর করার জন্য এক জগ পানিতে
তিন থেকে চারটি বাসক গাছের পাতা দুই থেকে তিন ঘন্টা ভিজিয়ে রাখালে পানি বিশুদ্ধ
হয়ে যায়। তারপরে সেই পানি খাওয়া এবং যেকোনো কাজে ব্যবহার করতে পারেন।
শরীরে ঘামের দুর্গন্ধঃ গরমের দিনে অনেকের শরীর থেকে ঘামের দুর্গন্ধ বের
হয়। শরীরের দুর্গন্ধ দূর করার জন্য বাসক পাতার উপকারিতা অনেক। বাসক পাতার রস
গোসল করার পূর্বে সমস্ত শরীরের ভালোভাবে লাগিয়ে নিন। কিছুক্ষণ পরে গোসল করে নিন।
এভাবে নিয়মিত করলে শরীরের দুর্গন্ধ হয়ে যাবে।
মাংসপেশির ব্যথাঃ খেলাধুলা বা ব্যায়াম করতে গিয়ে অনেক সময় মাংসপেশীতে
টান পড়ে ব্যথা হয়ে যায়। এই মাংসপেশীর ব্যথা দূর করার জন্য বাসক গাছের পাতা
ব্যবহার করতে পারেন। চুন এবং হলুদের সাথে বাসক গাছের পাতার রস মিশিয়ে ব্যথার
স্থানে মালিশ করলে দ্রুত মাংসপেশীর ব্যথা থেকে উপশম পাওয়া যায়।
চর্মরোগঃ যাদের শরীরের চর্ম রোগ রয়েছে এ রোগ থেকে নিস্তান পাওয়ার জন্য
বাসক পাতা হতে পারে মহা ঔষধ। চর্ম রোগে আক্রান্ত রোগীরা যদি হলুদের সাথে বাসক
পাতার রস মিশিয়ে শরীরে ভালোভাবে লাগিয়ে এতক্ষণ পরে গোসল করে। নিয়মিত ব্যবহারে
চর্মরোগ থেকে মুক্তি পাওয়া যায়।
উকুন দমনঃ আপনাদের মাথায় প্রচুর পরিমাণে উকুন রয়েছে তারা বাসক পাতার
ব্যবহারে উকুন দূর করতে পারেন। গোসল করার প্রায় ২০ থেকে ৩০ মিনিট পূর্বে বাসক
পাতার রস ভালোভাবে চুলের মধ্যে লাগিয়ে নিন। এবং আধা ঘন্টা পরে ভালোভাবে শ্যাম্পু
দিয়ে দিয়ে ফেলুন নিয়মিত ব্যবহার অল্প কিছুদিনের মধ্যে উকুন থেকে মুক্তি যাবেন।
ত্বক ফর্সা করতে বাসক পাতার ব্যবহার
মানুষ ত্বক ফর্সা করার জন্য কত ধরনের ক্রিম বা ফেসওয়াশ ব্যবহার করে থাকেন।
এরপরেও কিন্তু খুব ভালো একটা ফলাফল পাওয়া যায় না। বিশেষ করে মেয়েরা বিভিন্ন
ধরনের বাজারে পাওয়া প্রোডাক্ট ব্যবহার করে থাকেন। মেয়েরা বিভিন্ন ধরনের নাইট
ক্রিম ইউজ করে তারপরেও অনেক সময় নিজের ত্বক ফর্সা করতে ব্যর্থ হয়। তাই আমরা
চাইলে নিজের ত্বক ফর্সা করার জন্য।
ঘরে বসেই প্রাকৃতিক উপাদান দিয়ে রূপচর্চা করতে পারি। বাজারে কয় কি তোর সমস্ত
প্রোডাক্ট কেমিক্যাল যুক্ত। যেই কেমিক্যাল অনেক সময় আমাদের ত্বকের বড় ধরনের
ক্ষতি করে থাকে। কেমন কিছু ক্ষতিকর প্রোডাক্ট রয়েছে যেগুলি ব্যবহার স্ক্রিনে
ক্যান্সার হয়ে যায়। তাই আমরা যদি সঠিক নিয়ম জেনে ঘরোয়া উপাদান দিয়ে রূপচর্চা
করতে পারি তাহলে ত্বক সুন্দর থাকবে।
এবং ফর্সাও হবে। ত্বক ফর্সা করার জন্য আমরা বাসক পাতার ব্যবহার করতে পারি। বাসক
পাতার রসের সাথে শঙ্খচূর্ণ মিশিয়ে নিয়মিত ব্যবহার করলে ত্বক ফর্সা এবং উজ্জ্বল
হবে। তাই ত্বক ফর্সা এবং উজ্জ্বল করার জন্য নিয়মিত বাসক পাতার রস এবং শঙ্খচূর্ণ
ব্যবহার করতে পারি।
বাসক পাতার ক্ষতিকর দিক
- বাসক পাতার পার্শ্ব প্রতিক্রি খুব একটা বেশি নেই তবে প্রয়োজনের থেকে বেশি খাওয়ার ফলে কিছু সমস্যা দেখা দিতে পারে। তাই অবশ্যই পরিমাণ মতো খেতে হবে। পরিমাণের থেকে বেশি খেলে বমি হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। এবং পেটের নানা সমস্যা দেখা দিতে পারে। তাই অবশ্যই যেকোনো ধরনের ভেষজ উদ্ভিদ পরিমাণ মতো খেতে হবে।
- প্রয়োজনে ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে খাওয়া উত্তম। গর্ভবতী মহিলাদের বাসক পাতা খাওয়া থেকে বিরত থাকা উচিত। গর্ভাবস্থায় বাসক পাতা খাওয়ার ফলে মা এবং শিশু দুজনেই শারীরিকভাবে সমস্যা হতে পারে। নিয়মিত ভাষার পাতা খাওয়ার সময় অবশ্যই খেয়াল রাখতে হবে কেননা বাসক পাতা রক্তের শর্করা কমিয়ে দেয় যার কারণে শরীরের অস্বস্তিকর ভাব আসতে পারে।
- আরেকটা বিষয় খেয়াল রাখতে হবে বাসক পাতা খাওয়ার পূর্বে অবশ্যই ভালোভাবে পরিষ্কার করে নিবেন। কেননা বিভিন্ন ধরনের নোংরা ধুলাবালি পাতার উপরে থাকার কারণে রোগ জীবাণু ছড়াতে পারে। বিশেষ করে বাচ্চাদের খাওয়ানোর ব্যাপারে খুবই সতর্কতা অবলম্বন করা উচিত।
লাল বাসক পাতার উপকারিতা
- বাসক গাছ সাধারণত দুই প্রকার হয়ে থাকে। একটা সাধারণ বাসক পাতা আরেকটা লাল বাসক পাতা। বাসক পাতার ফুল সাধারণত সাদা হয়ে থাকে। কিন্তু লাল বাসক গাছের ফুল টক টক কে লাল রঙের হয়। লাল বাসর গাছের ফুল জন্ডিস রোগের জন্য বেশি কার্যকর হয়ে থাকে। তাই জন্ডিস রোগীদের জন্য লাল বাসক গাছের ফুল মধুর সাথে মিশিয়ে খেলে জন্ডিস থেকে দ্রুত মুক্তি লাভ পাওয়া যায়।
- এবং লিভারের সমস্ত সমস্যার সমাধান করে লিভারকে রাখে মজবুত। তাই জন্ডিসের আক্রান্ত রোগীরা লাল বাসক গাছের ফুল বেটে রস করে নিয়ে মধুর সাথে মিশিয়ে নিয়মিত খেতে পারেন। এর দ্বারা দ্রুত জন্ডিস রোগ থেকে আরোগ্য লাভ পাওয়া যাবে।
লেখকের শেষ কথা
বাসক পাতার উপকারিতা ও অপকারিতা এবং ঔষধি গুনাগুন সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে
পারলাম। আরো জানলাম বাসক পাতা কি কি রোগের জন্য কার্যকরী। এবং কোন রোগের জন্য
কিভাবে বাসক পাতা খেতে হয় এবং ব্যবহার করতে হয়। তবে অবশ্যই বাসক পাতা পরিমাণ
মতো এবং নিয়ম তান্ত্রিক খেতে হবে তাছাড়া ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
আজকের আর্টিকেল পড়ে যদি আপনারা উপকৃত হয়ে থাকেন। তাহলে নিয়মিত আমাদের ওয়েব
সাইট করুন। কেননা প্রতিনিয়ত আমাদের সাইটে স্বাস্থ্য সচেতনামূলক নতুন নতুন
আর্টিকেল দিয়ে থাকি। আমাদের আর্টিকেল পড়ে ভালো লাগলে বন্ধুদের সাথে শেয়ার করতে
পারেন। সময় দিয়ে সাথে থাকার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ।
এস এম ট্রপিক্স এর নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url