চিনিগুড়া গাছের উপকারিতা ও অপকারিতা - স্টেভিয়া চাষ করার নিয়ম
চিনিগুড়া গাছের উপকারিতা সম্পর্কে জানতে চাচ্ছেন? তাহলে আর দেরি কেন চলুন জেনে
নেই চিনিগুড়া গাছে কি কি গুনাগুন রয়েছে। এবং কি কি রোগের কাজ করে চিনিগুড়া গাছ।
আরো জানবো মিশ্রিদানা পাতা খাওয়ার নিয়ম সম্পর্কে।
চিনিগুড়া বা বন ধনেপাতা নামে পরিচিত এই গাছটি চিনির বিকল্প হিসেবে ব্যবহার করা
যায়। এই গাছের মধ্যে রয়েছে চিনির থেকেও প্রায় ৩০০ গুণ বেশি মিষ্টি। সব থেকে
মজার বিষয় হলো চিনির থেকে বেশি মিষ্টি হওয়া সত্বেও এই
গাছের নির্জাস চিনির পরিবর্তে ডায়াবেটিসের রোগীরা খেলে কোন ক্ষতি করে না। চলুন
তাহলে আজকে আর্টিকেলে চিনিগুড়া গাছ সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নেই।
পোস্ট সূচিপত্রঃ চিনিগুড়া গাছের উপকারিতা ও অপকারিতা - স্টেভিয়া চাষ করার নিয়ম
চিনিগুড়া গাছ সম্পর্কে কিছু তথ্য
চিনিগুড়া গাছের সাথে বাংলাদেশের গ্রামাঞ্চলের মানুষের একটি সুপরিচিত রয়েছে।
কেননা এই গ্যাস্টিক বাংলাদেশের গ্রাম অঞ্চলে বেশি পাওয়া যায়। এবং কি
গ্রামাঞ্চলের মানুষ বিভিন্ন রোগের জন্য এই গাছের নির্যাস বা রস খেয়ে থাকে।
চিনিগুড়া গাছের বিভিন্ন জায়গায় বিভিন্ন নামে পরিচিতি রয়েছে। যেমন বন ধনে, বন
ধনিয়া, মিশ্রিদানা, চিনি মিঠাই, চিনি পাতা, ফুরফুরি, তালমাকনা, চিনিটোরা, সহ
ইত্যাদি নামে পরিচিত।
এই গাছের গুনাগুন রয়েছে অনেক। চিনিগুড়া গাছ প্যারাগুয়ে পাহাড়ি অঞ্চলে চাষাবাদ
করা হত। তবে এখন বিভিন্ন দেশে এটি চাষাবাদ শুরু হয়েছে। যেমন- জাপান, ব্রাজিল,
চীন, কলম্বিয়া, মেক্সিকো, মালয়েশিয়া, কানাডা, আমেরিকা, থাইল্যান্ড, ইসরাইল
কোরিয়া সহ বিভিন্ন দেশে চিনিগুড়া গাছ বাণিজ্যিক ভাবে চাষাবাদ শুরু হয়েছে।
বাংলাদেশেও ব্রাক কোম্পানি তাদের নার্সারিতে এটি চাষাবাদ শুরু করেছে।
আরো পড়ুনঃ চুলের জন্য জবা পাতার উপকারিতা সম্পর্কে
এছাড়াও বাংলাদেশের গ্রাম অঞ্চলে বিভিন্ন জায়গায় চিনিগুড়া গাছ দেখা যায়।
বিশেষ করে পরিত্যক্ত জমিতে রাস্তার ধারে বা বিভিন্ন বন জঙ্গলে চিনিগুড়া গাছ
জন্মায়। গ্রামাঞ্চলের আগেকার মানুষ বিভিন্ন রোগের জন্য চিনিগুঁড়া ঘাসের রস
খেয়ে থাকেন। চিনি গুড়া গাছের উচ্চতা ২/৩ ফুট লম্বা হয়। ছোট ছোট পাতা হয় এবং এর
ফুলগুলি হয় সাদা। এবং বর্ষাকালে চিনিগুরা গাছে ফুল হয় এবং ছোট ছোট ফল হয়ে
থাকে।
এই ফলের বীজ থেকে কিরে চিনিগুড়া গাছের জন্ম বিস্তার লাভ করে। চিনিগুড়া গাছের
পাতা অত্যন্ত মিষ্টি যা চিনি থেকে প্রায় ৩০০ গুন বেশি। এত বেশি মিষ্টি হওয়ার
পরেও এতে কোন ধরনের কার্বোহাইড্রেট নেই। যার কারণে ডায়াবেটিসের রোগীরাও এটি খেতে
পার। ডায়াবেটিসের রোগীদের জন্য চিনির বিকল্প প্রাকৃতিক উপাদান হলো চিনিগুড়া
গাছের পাতা। ছেলেগুলা গাছের কাঁচা পাতা পাতা চিবিয়ে খাওয়া যায়। আবার এটি
শুকিয়ে বোতলে করে সংরক্ষণ করে রাখা যায়।
চিনিগুড়া গাছের উপকারিতা
বর্তমান আধুনিক যুগের মানুষ শরীরের বিভিন্ন রোগের জন্য জন্য আধুনিক চিকিৎসার উপরে
নির্ভরশীল হয়ে পড়েছে। সৃষ্টিকর্তা মানব দেহের রোগের চিকিৎসার জন্য আমাদের
চারপাশে বিভিন্ন ধরনের গাছ বা ভেজস উদ্ভিদ দিয়ে রেখেছেন। এই উদ্ভিদের মাধ্যমে
মানবদেহের রোগ নিরাময় রেখেছেন। অথচ আমরা এই সমস্ত ঔষুধি গাছ চিনি না।
আর না চেনার কারণে আমরা বাড়ির আশপাশে থাকা বিভিন্ন রোগের মহা ঔষধ থেকে আমরা
বঞ্চিত হই। তাই আমাদের বাড়ির আশপাশে থাকা বিভিন্ন ভেজস উদ্ভিদ সম্পর্কে ধারণা
রাখা দরকার। তেমনি একটি ভেসজ উদ্ভিদ হল চিনিগুড়া বা বন ধনিয়া গাছ। চিনিগুড়া
গাছের প্রচুর পরিমাণে উপকারিতা রয়েছে। চিনিগুড়া গাছের পাতা, মূল, শিকড়, কান্ড
সবকিছুই মানবদেহের বিভিন্ন রোগ মুক্তির জন্য বিশেষভাবে ভূমিকা পালন করে।
চিনিগুড়া বা মিশ্রিপাতার নির্যাস চিনির থেকে প্রায় ৩০০ গুণ বেশি মিষ্টি। তাই
চিনি গুড়া গাছের নির্যাস চীনের বিকল্প হিসেবে ব্যবহার করা হয়। ডায়াবেটিসের
রোগীরাও এই গাছের নির্যাস বা রস চিনির বিকল্পে হিসেবে খেতে পারে। চিনিগুড়া গাছের
নির্যাস ডায়াবেটিসের রোগীদের কোন ধরনের ক্ষতি করে না। বরং ডায়াবেটিস
নিয়ন্ত্রণে রাখে। মিষ্টি জাতীয় খাবারে চিনির পরিবর্তে চিনিগুড়া গাছের পাতা বা
রস ব্যবহার করতে পারেন।
চিনিগুড়া গাছের রস বা নির্যাস ব্যবহারের ফলে মিষ্টির কোন কমতি ঘটবে না। চিনি
গুড়া গাছের নির্যাস বা রস অথবা পাতা শুকিয়ে গুড়ো করে চিনির পরিবর্তে চা বা
কফির সাথে খেতে পারেন। এছাড়াও চিনিগুড়া গাছ বিভিন্ন রোগের ঔষধ হিসেবে কাজ করে
যেমন- ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখে, দাঁত সুস্থ রাখে, রক্তচাপ কমাতে সাহায্য করে,
জ্বর কমাতে সাহায্য করে, শরীরের অতিরিক্ত ওজন কমাতে সাহায্য করে ইত্যাদি।
চিনি গুড়া গাছের ঔষধি গুনাগুন সমূহ
আমাদের চারপাশে যত গাছ রয়েছে প্রতিটি গাছই মানুষের মানব দেহের জন্য উপকারী।
কিন্তু আমরা অনেক গাছেরই উপকার সম্পর্কে জানিনা। কোন গাছের মধ্যে কোন রোগের ঔষধের
গুনাগুন রয়েছে তা আমরা না জানার কারণে এ সমস্ত গাছ থেকে উপকৃত হতে পারিনা। আমরা
যদি বিভিন্ন ধরনের গাছের ঔষধি গুনাগুন সম্পর্কে জানতে পারতাম তাহলে আমাদের শরীরে
এত রোগ দেখা দিত না।
কেননা আমাদের গাছের ঔষধি গুনাগুন সম্পর্কে জানা থাকলে রোগ আসার পূর্বেই আমরা
সেগুলি সেবন করে রোগ থেকে মুক্তি লাভ করতাম। তেমনিভাবে একটি ঔষধি গুনাগুন সম্পন্ন
একটি গাছ হচ্ছে চিনিগুড়া বা মিষ্টিদানা গাছ। এই চিনি গুড়া গাছের মধ্যে রয়েছে
মানব দেহের বিভিন্ন রোগের ঔষধি গুনাগুন। যার রস নির্যাস সেবন করে মানুষ বিভিন্ন
রোগ থেকে মুক্তি লাভ করতে পারে। চিনিগুড়া গাছ কোন কোন রোগের কাজ করে তা নিম্নে
তুলে ধরা হলোঃ
- ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ করে।
- গ্যাস্ট্রিক দূর করে।
- আমাশয় বা ডায়রিয়া ভালো করে।
- মুখের ঘা এর জন্য কার্যকরী।
- শরীরের ওজন নিয়ন্ত্রণ করতে সাহায্য করে।
- উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করে ।
- হৃদ যন্ত্রের স্বাস্থ্য ভালো রাখে।
- জ্বর ও মাথা ব্যথা ভালো করে।
- চোখে রক্ত জমাট বাঁধলে তা দূর করে।
- শিশুদের শ্বাসকষ্ট ভালো করে।
- জন্ডিস ভালো করে।
- তক্ব ভালো রাখতে সাহায্য করে।
কোন রোগে কিভাবে খেতে হয় চিনিগুড়া গাছের পাতা
যে কোন ভেষজ উদ্ভিদ খাওয়ার পূর্বে খাওয়ার নিয়মাবলী ভালোভাবে জেনে নিতে হয়।
খাওয়ার নিয়ম সম্পর্কে ভালো ভাবে জানা না থাকলে হিতে বিপরীত হওয়ার সম্ভাবনা
থাকে। কারণ প্রতিটি জিনিসেরই খাওয়ার একটি নিয়মাবলী রয়েছে। নিয়মাবলী থেকে কম
খেলে যেমন কার্যকর কম হয়। ঠিক তেমনি পরিমাণ থেকে অতিরিক্ত খেলে ক্ষতি হওয়ার
সম্ভাবনা রয়েছে। চিনি গুড়া গাছের পাতা কোন রোগের জন্য কিভাবে কতটুকু খেতে হয়
তা নিম্নে বিস্তারিত ভাবে তুলে ধরা হলোঃ
ডায়াবেটিসঃ বর্তমান সময়ে বেশিরভাগ মানুষের ডায়াবেটিসের সমস্যা দেখা
যায়। আর যাদের ডায়াবেটিস হয়েছে তারা মিষ্টি জাতীয় কোন কিছু খেতে পারে না।
কেননা মিষ্টি অতিরিক্ত খাওয়ার কারণে সুগার বেড়ে যায়। যার কারণে ডায়াবেটিসের
রোগীরা মিষ্টি যুক্ত খাওয়া থেকে দূরে থাকে। চিনিগুড়া গাছের নির্যাস বা পাতা
চিনির বিকল্প হিসেবে ডায়াবেটিসের রোগীরা খেতে পারে। এর দ্বারা মিষ্টি ও খাওয়া
হবে পাশাপাশি ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে থাকে।
গ্যাস্ট্রিকঃ গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা নেই এমন মানুষ খুঁজে পাওয়া দুষ্কর।
বর্তমান সময়ে অতিরিক্ত তেল যুক্ত খাওয়ার কারণে কম বেশি প্রতিটি মানুষের
গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা দেখা যায়। চিনিগুড়া বা বন ধনে পাতার রস প্রতিদিন সকালের
২/৩ চামচ খেলে গ্যাস্ট্রিক দূর হয়ে যায়।
আমাশয় বা ডাইরিয়াঃ চিনিগুড়া গাছ পাতা থেকে শুরু করে মূল বা শিকড়
সবকিছুই বিভিন্ন রোগের ঔষধ হিসেবে কাজ করে। আমাশয় বা আডারিয়ার রোগীদের জন্য চিনি
গুড়া গাছের শিকড় রস করে খেলে অনেক উপকার পাওয়া যায়।
মুখের ঘাঃ মুখের ভিতর ঘা হলে চিনিগুড়া গাছের পাতা ভালোভাবে পরিষ্কার করে
মুখের ভিতর নিয়ে চিবালে মুখের ঘা ভালো হয়ে যায়। এবং দাঁতের মাড়ি ফোলা সহ দাঁতের
যেকোনো ধরনের সমস্যার জন্য অত্যন্ত কার্যকরী চিনিগুড়া গাছের পাতা।
শরীরের ওজন নিয়ন্ত্রণঃ শরীরের অতিরিক্ত ওজন স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর। আর
শরীরে অতিরিক্তের ওজন হওয়ার কারণে বিভিন্ন ধরনের রোগ দেখা দেয়। আমার শরীরের ওজন
নিয়ন্ত্রণ করার জন্য চিনিগুড়া গাছ অত্যন্ত কার্যকর। কেননা চিনিগুড়া গাছের পাতা
চিনির থেকে অতিরিক্ত মিষ্টি হওয়ার কারণে চিনির পরিবর্তে এটি খেলে খাদ্যের মধ্যে
মিষ্টি ঠিকই হবে।
কিন্তু চিনিতে যে পরিমাণে ক্যালরি থাকে বিন্দু পরিমাণ ক্যালরি চিনিগুড়া পাতার
মধ্যে নেই। আর আপনার শরীরের ভিতরে কম গ্রহন করলে ওজন বাড়ার প্রবণতা কমে যায়।
এছাড়াও চিনিগুড়া গাছ রক্তের ইনসুলিন বাড়তে দেয় না। এজন্য চিনিগুড়ার গাছের পাতা
ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করে।
উচ্চ রক্তচাপঃ উচ্চ রক্তচাপ কমাতে চিনিগুড়ার পাতা অত্যন্ত কার্যকরী
ভূমিকা পালন করে। চিনি গোড়া গাছের পাতায় থাকা এমন কিছু উপাদান যা উচ্চ রক্তচাপ
নিয়ন্ত্রণ করতে সাহায্য কর। চিনিগুড়া গাছের পাতায় রয়েছে খনিজ, ক্যারোটিন,
বিটা, ও ভিটামিন সি যা মানুষের শরীরের উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করতে সাহায্য করে।
তাই আপনি শরীরের উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণের রাখতে চিনি গুড়া গাছের পাতা ব্যবহার
করতে পারে।
জ্বর ও মাথা ব্যথাঃ অনেক সময় দেখা যায় শরীরে জ্বর দীর্ঘদিন ধরে লেগেই
থাকে। কোন ওষুধ কাজ করে না। এই ধরনের জ্বর ও মাথাব্যথার জন্য চিনিগুড়া গাছের
পাতা রস করে খেলে উপকার পাওয়া যায়। মুরুব্বিদের দেখা যায় তারা জ্বর ও
মাথাব্যথার জন্য ওষুধের পরিবর্তে চিনিগুড়া গাছের রস খেয়ে থাকেন। তাই আপনারাও
পুরাতন জ্বর ও মাথা ব্যথার জন্য চিনিগুড়া গাছের রস খেতে পারেন।
চোখে রক্ত জমাট বাঁধাঃ অনেক সময় দেখা যায় বিভিন্ন কারণবশত চোখের মধ্যে
রক্ত জমাট বেঁধে থাকে। চোখের এই জমাট বাঁধা রক্ত দূর করার জন্য চিনিগুড়া গাছের
পাতা বিটে লেপ দিতে পারেন। নিয়মিত দিলে দুই থেকে তিন দিনের মধ্যে চোখের জমাট
বাঁধা রক্ত দূর হয়ে যাবে।
শিশুদের শ্বাসকষ্টঃ সাধারণত ছোট বাচ্চাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কম থাকে।
যার কারনে দেখা যায় অল্পতেই ঠান্ডা লেগে যায়। এবং কি শ্বাসকষ্ট দেখা দেয়
বাচ্চাদের এ শ্বাসকষ্টের জন্য চিনিগুড়া গাছের পাতা রস করে ছোট বাচ্চাদের
খাওয়ালে শ্বাসকষ্ট দূর হয়ে যায়।
জন্ডিস রোগঃ জন্ডিস এমন একটি মারাত্মক রোগ যা ধীরে ধীরে মরণ বেধিতে
রূপান্তরিত হয়। দীর্ঘদিন জন্ডিস হলে আক্রান্ত হলে এক সময় লিভার এ গিয়ে অ্যাটাক
করে। আর লিভারে অ্যাটাক করার কারণে ধীরে ধীরে মৃত্যুর মুখে ঢলে পড়ে। আর গাছের
পাতা জন্ডিস রোগীর আক্রান্ত রোগীদের নিয়মিত খাওয়ালে জন্ডিস রোগ থেকে মুক্তি
পাওয়া যায়। তাই যাদের জন্ডিস রোগের নমুনা দেখা দিবে। সাথে সাথেই নিয়মিত
চিনিগুড়া গাছের রস খাওয়া শুরু করলে জন্ডিস রোগ থেকে মুক্তি পাওয়া যাবে।
ত্বক ভালো রাখেঃ চিনিগুড়া গাছের পাতা ত্বকের জন্য অত্যন্ত একটি উপাদান।
মানুষ স্বাভাবিকভাবেই ত্বকের ব্যাপারে একটু বেশি সচেতন হয়ে থাকে। কেননা কেউ চায়
না তার তক্ব খারাপ হয়ে যাক। বিশেষ করে মেয়েরা নিজের ত্বকের ব্যাপারে অনেক বেশি
সচেতন হয়ে থাকে। কেউই চায় না যে ত্বকের মধ্যে কোন দাগ থাকুক। তাই প্রত্যেকেই
ত্বককে সুন্দর এবং উজ্জ্বল করার জন্য বিভিন্নভাবে প্রচেষ্টা করে থাকি।
আর ত্বককে সুন্দর ও উজ্জ্বল করতে চিনিগুড়া গাছের উপকারিতা অপরিসীম। চিনি গুড়া
গাছে থাকা খনিজ, বিটা, ক্যারোটিন ও ভিটামিন সি ত্বকের স্বাস্থ্যের জন্য অত্যন্ত
উপকারী উপাদান। যা তক্বকে সুন্দর ও উজ্জ্বল করে তুলে। তাই উজ্জ্বল ও সুন্দর
ত্বকের জন্য চিলি গুড়া গাছের ব্যবহার করতে পারেন।
স্টেভিয়া চাষ করার নিয়ম
স্টেভিয়া চাষ করার জন্য উপযোগী মাটি হল বেলে দো-আঁশ মাটি। যে মাটিতে সাধারণত পানি
জমে থাকে না। বাংলাদেশের আবহাওয়া ও জলবায়ু হিসেবে সারা বছর স্টেভিয়া চাষাবাদ
করা যায়। স্টেভিয়া বাণিজ্যিকভাবে চাষাবাদ করার জন্য। সর্বপ্রথম মাটিকে চাষাবাদের
উপযুক্ত করে নিতে হবে। এবং বেড তৈরি করতে হবে এমন ভাবে বেড তৈরি করতে হবে যেন
বৃষ্টির পানি বেডে লেগে না থাকে।
বেডের মধ্যে একটি গাছ থেকে আরেকটি গাছের দূরত্ব ৬ থেকে ৭ ইঞ্চি দিতে হবে। আর একটি
শাড়ি থেকে আরেকটি শাড়ির দূরত্ব হবে কমপক্ষে ১ ফুট। স্টেভিয়া বংশবৃদ্ধি করার
জন্য দুইটি পদ্ধতি রয়েছে। (১) টিস্যু কালচার পদ্ধতি (২) স্টেম কাটিং পদ্ধতি। তবে
টিস্যু কাটিং পদ্ধতিতে বংশবৃদ্ধি করার জন্য অনেক লাভজনক। কেননা কাটিং পদ্ধতিতে
শেখর গজাতে সময় অনেক বেশি লেগে যায়।
যার কারনে বংশবৃদ্ধি করতে সময় বেশি লেগে যায়। বাণিজ্যিকভাবে চাষাবাদের জন্য
স্টেভিয়া গাছ প্রতি একর প্রতি প্রায় ৪০ হাজার গাছ লাগানো যায়। স্টেভিয়া গাছ
রোপনের পূর্বে মাটিকে ভালোভাবে তৈরি করে নিতে হবে। সে ক্ষেত্রে অবশ্যই খেয়াল
রাখতে হবে ইউরিয়া সারের থেকে পটাশ এবং ফসপেটসার বেশি পরিমাণে দিতে হবে। কেননা
ইউরিয়া সার অতিরিক্ত ব্যবহারের ফলে।
স্টেভিয়া গাছের পাতার মিষ্ট নষ্ট করে দেয়। তাই সব থেকে উত্তম হলো জৈব সার বেশি
পরিমাণে ব্যবহার করা। স্টেভিয়া গাছে সাধারণত পোকামাকড় কম হয়ে থাকে। তবে পানি
লেগে থাকার কারণে অনেক সময় গাছের গোড়া পচন ধরে যায়। সে ক্ষেত্রে প্রাকৃতিকভাবে
নিম পাতার রস দিয়ে স্প্রে করার মাধ্যমে পোকামাকড় রোধ করা যায়।
স্টেভিয়া গাছের চারা ঘরের ছাদে ফুলের টবের মধ্যেও চাষাবাদ করা যায়। তবে অবশ্যই
একটা জিনিস খেয়াল রাখতে হবে যে জায়গায় স্টেভিয়া গাছের চারা রাখবো অবশ্যই রোদ
থাকতে হবে। স্টেভিয়া গাছ রোপনের ২৫ থেকে ৩০ দিনের মধ্যে পাতা সংগ্রহ করা যায়।
তাই আমরা চাইলে বাড়ির ছাদে বা বারান্দায় টপে করে স্টেভিয়া গাছ রোপন করতে পারি।
চিনিগুড়া গাছের ক্ষতিকর দিক
প্রতিটি জিনিসেরই কিছু না কিছু ক্ষতিকর দিক থেকে থাকে। তবে সঠিক নিয়ম অনুসারে
ব্যবহারে পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া দেখা যায় না। অতএব যে কোন ধরনের প্রাকৃতিক উপাদান
থেকে উপকৃত হতে হলে অবশ্যই পরিমাণ, খাওয়ার এবং ব্যবহার করার নিয়ম সঠিকভাবে জানতে
হবে। পরিমাণের অতিরিক্ত কোন জিনিস এই ভালো নয়। নিম্নে চিনিগুড়া গাছের ক্ষতিকর
দিকগুলি তুলে ধরা হলো।
বমি হওয়াঃ চিনিগুড়া গাছ অতিরিক্ত খাবার ফলে বমি বমি ভাব অনুভব হতে পারে।
আবার কারো মাথাব্যথা বা মাথা ঘোরা দেখা দিতে পারে।
নিম্ন রক্তচাপঃ চিনিগুড়া চিনিগুড়া গাছে থাকার রাসায়নিক পদার্থ গুলি
যেহেতু উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করে। সে ক্ষেত্রে যাদের নিম্ন রক্তচাপ রয়েছে
তারা চিনি গুড়া গাছের রস খাওয়ার ফলে রক্তচাপ আরো কমিয়ে দিতে পারে। যার ফলে
দুর্ঘটনার সম্মুখীন হতে পারে। তাই যাদের নিম্ন রক্তচাপ রয়েছে তারা তারা অবশ্যই
খাওয়ার আগে একটু ভেবেচিন্তে খাবেন।
এলার্জিঃ অনেকেরই শরীরে বিভিন্ন ধরনের এলার্জি থেকে থাকে তাই যাদের
এলার্জিজনিত সমস্যা রয়েছে। তারা চিনিগুড়া গাছ খাওয়ার পূর্বে অবশ্য ডাক্তারের
পরামর্শ নিবেন।
এছাড়াও গর্ভাবস্থায় প্রাকৃতিক কোন ধরনের ভেষজ ওষুধ খাওয়ার পূর্বে অবশ্যই
ডাক্তারের পরামর্শ নিবেন। ডাক্তারের পরামর্শ ব্যতীত কোন ধরনের ঘরোয়া পদ্ধতিতে
তৈরি কৃত কোন ঔষধ খাওয়া ঠিক নয়।
লেখকের শেষ কথা
আজকে আর্টিকেলে আমরা জানতে পারলাম চিনি গুড়া গাছের উপকারিতা ও অপকারিতা
সম্পর্কে। আরো জানতে পারলাম চিনিগুড়া গাছের ঔষধি গুনাগুন সম্পর্কে। তবে একটা কথা
মাথায় রাখতে হবে এই সমস্ত প্রাকৃতিক গাছ থেকে উপকৃত হওয়ার পূর্বে অবশ্যই
ব্যবহারবিধি সহ সমস্ত কিছু ভালোভাবে জেনে তারপরে ব্যবহার করবেন।
আজকে আর্টিকেল পড়ে যদি আপনি উপকৃত হয়ে থাকেন। তাহলে নিয়মিত ওয়েবসাইট ভিজিট
করুন। কেননা আমরা প্রতিনিয়ত আমাদের ওয়েবসাইটে স্বাস্থ্য সচেতন মূলক আর্টিকেল
লিখে থাকি। আমাদের আর্টিকেল পড়ে উপকৃত হলে অবশ্যই আপনার বন্ধুদের সাথে শেয়ার
করতে ভুলবেন না সময় দিয়ে সাথে থাকার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ।
এস এম ট্রপিক্স এর নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url