অড়হর গাছের উপকারিতা ও অপকারিতা এবং পুষ্টিগুন
অড়হর গাছের উপকারিতা সম্পর্কে জানতে চাচ্ছেন? অড়হর গাছের মধ্যে রয়েছে হাজারো
ঔষধি গুনাগুন। তাহলে চলুন আজকে আর্টিকেলে আমরা অড়হর গাছের উপকারিতা সম্পর্কে
বিস্তারিত জেনে নেই। আরো জানবো বাসক পাতার উপকারিতা সম্পর্কে।
অড়হর মূলত এক প্রকার ডাল। তবে এই গাছের পাতার মধ্যে রয়েছে হাজারো ঔষধি গুনাগুন।
অড়হর গাছের পাতা সেবন করার মাধ্যমে শরীরের বিভিন্ন রোগ থেকে মুক্তি পাওয়া যায়।
বিশেষ করে জন্ডিসের জন্য অত্যন্ত কার্যকরী। তাহলে চলুন আজকে আর্টিকেলে অড়হর গাছের
উপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নেই।
পোস্ট সূচিপত্রঃ অড়হর গাছের উপকারিতা ও অপকারিতা এবং পুষ্টিগুন
অড়হর গাছ সম্পর্কে কিছু তথ্য
অড়হর ডাল আমরা অনেকেই খেয়ে থাকি। কিন্তু অড়হর গাছের উপকারিতা সম্পর্কে আমাদের
অনেকেরই অজানা। এই গাছের মধ্যে রয়েছে বিভিন্ন ধরনের ঔষধি গুনাগুন। শরীরের
বিভিন্ন রোগের উপসর্গ হিসেবে কাজ করে থাকে। অড়হর একটি গুল্ম জাতীয় উদ্ভিদ। অড়হর
গাছ ভারতের বিভিন্ন প্রদেশে জন্মে। তবে সব থেকে বেশি উত্তর প্রদেশ বিহারি প্রচুর
পরিমাণে চাষ হয়।
এছাড়া ও মায়ানমার ভুটান সহ বেশ কিছু দেশের চাষ করা হয়। বাংলাদেশের উত্তর
অঞ্চলের অড়হর ডাল চাষ করা হয়। যেমন রংপুর, দিনাজপুর, পঞ্চগড়, যশোর, কুষ্টিয়া,
জেলায় চাষাবাদ করা হয়। অড়হর গাছ চাষাবাদ এর প্রায় তিন মাসের মধ্যে ফলনশীল হয়ে
ওঠে। অড়হর গাছ প্রায় সব ধরনের আবহাওয়াতে হয়ে থাকে। এই গাছ অনেক শক্ত হয় তবে
পাতা এবং প্রশাখা গুলো নরম হয়ে থাকে।
অড়হর গাছের ফুলগুলো হয় হালকা হলুদ বর্ণের। পাতাগুলো হয় বাদামি কালারের। অড়হর
গাছের কচি ফলগুলো সবজি হিসেবে খাওয়া যায়। আর পাকা ফলগুলো ডাল হিসেবে খাওয়া
হয়। অড়হর ডালের মধ্যেও রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন এবং পুষ্টিগুণ। বাংলাদেশের
মধ্যে অনেকে রয়েছে যাদের ডাল ছাড়া চলে না। প্রতিনিয়ত তাদের খাবারের তালিকার
মধ্যে ডাল অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। আর ডালে প্রচুর পরিমাণ প্রোটিন রয়েছে। আর প্রোটিন
যুক্ত ডালের মধ্য থেকে অন্যতম হলো অড়হর ডাল।
অড়হর গাছের উপকারিতা
অড়হর এক প্রকার ঔষধি গাছ বললেই চলে। কেননা এই গাছের মধ্যে রয়েছে হাজারো ঔষধি
গুনাগুন। যদিও এটি একপ্রকার ডাল। যেকোনো ডালেও রয়েছে প্রচুর পরিমাণে পুষ্টিকর
প্রোটিন। ডাল জাতীয় যত উদ্ভিদ রয়েছে প্রতিটি পুষ্টি গুণে ভরপুর। বিশেষ করে ডাল
মানুষের শরীরে প্রোটিন যোগাতে সহায়তা করে। ঠিক তেমনি অড়হর ডালও মানুষের শরীরে
প্রোটিনের পাশাপাশি।
বিভিন্ন রোগ থেকে উপসর্গ হিসেবে কাজ করে। বিশেষ করে অড়হর গাছের পাতায় প্রচুর
পরিমাণে ঔষধি গুনাগুন এবং পুষ্টিকর উপাদান রয়েছে। এই গাছের পাতার মাধ্যমে
বিভিন্ন রোগ থেকে মুক্তি পাওয়া যায়। বিভিন্ন রোগের মহা ঔষধ হিসেবে কাজ করে অরহর
গাছের পাতা। বিশেষভাবে জন্ডিস, ডাইবেটিস অর্শ রোগ, কাশি, নিরাময় সহ বিভিন্ন
রোগের মহা ঔষধ এই অড়হর গাছ।
এছাড়া অড়হর গাছে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে পুষ্টিগুণ উপাদান। যেমন- ক্যালসিয়াম,
ফাইবার, কার্বোহাইড্রেট, মিনারেল, আয়রন, ম্যাগনেসিয়াম, প্রোটিন, পটাশিয়াম,
ফসফরাস, সোডিয়াম, জিংক, কপার, সেলেনিয়াম, নিয়াসিন, রাইবোফ্লেবিন, প্যান্টোথেনিক
আ্যসিড, ভিটামিন বি, ভিটামিন এ, ফোলেট, সহ আরো অনেক পুষ্টিকর উপাদান।
অড়হর গাছের ঔষধি গুনাগুন
আমাদের চারপাশে এমন কিছু গাছ রয়েছে যে গাছের গুনাগুন সম্পর্কে আমাদের অনেকেরই
অজানা। কেমন কিছু গাছ আমাদের আশেপাশে রয়েছে। এ সমস্ত গাছের মাধ্যমে বিভিন্ন
ধরনের মরণব্যাধি অসুখ থেকেও মুক্তি পাওয়া যায়। আয়ুর্বেদিক ঔষধের মধ্যে এই
সমস্ত গাছের প্রচুর ব্যবহার হয়ে থাকে। যা আপনার আমার বাড়ির পাশেই রয়েছে।
শুধুমাত্র না জানা থাকার কারণে আমরা সে সমস্ত গাছের থেকে উপকৃত হতে পারি না।
তেমনি একটি ঔষধি গুনাগুন যুক্ত গাছের নাম হল অড়হর গাছ। মানব দেহের বিভিন্ন রোগের
ঔষধ হিসেবে কাজ করে অড়হর গাছের পাতা। আমরা শারীরিকভাবে বিভিন্ন ধরনের অসুস্থতার
সম্মুখীন হয়ে থাকে। তবে এমন কিছু খাদ্য বা গাছের গুনাগুন রয়েছে।
যেগুলো সেবনের মাধ্যমে বিভিন্ন ধরনের রোগ থেকে মুক্তি পাওয়া যায়। তেমনি একটি
ঔষধি গাছ হল অড়হর গাছ। এই গাছের পাতা থেকে শুরু করে শিকড় পর্যন্ত পুরো গাছ যেন
ঔষধি গুনাগুনের ভরপুর। আবার এই গাছের ফল ডাল হিসেবে ব্যবহার করা হয়। চলুন এক
নজরে অড়হর গাছের ঔষধি গুনাগুন সম্পর্কে জেনে নিন।
- রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে।
- ওজন কমাতে সাহায্য করে।
- ক্যান্সারের ঝুঁকি কমাতে সহায়তা করে।
- হৃদরোগের হাত থেকে রক্ষা করেন।
- জন্ডিসের জন্য মহা ঔষধ হিসেবে কাজ করে।
- অশ্বরোগ নিরাময় করতে সহায়তা করে।
- মুখের অরুচি দূর করে রুচি নিয়ে আসে।
- জিহ্বা ক্ষত হয়ে গেলে পূরণ করতে সহায়তা করে।
- কাশি নিরাময় করতে সাহায্য করে।
- চুলকানির জন্য মহা ঔষধ হিসেবে কাজ করে।
- দাঁতের ব্যথা দূর করতে সহায়তা করে।
- চোখের ছানি দূর করতে সাহায্য করে।
- মাথাব্যথা দূর করতে সহায়তা করে।
অড়হর গাছের ঔষধি ব্যবহারবিধি
যেকোনো ধরনের ভেষজ উদ্ভিদ ব্যবহারের পূর্বে অবশ্যই তার নিয়মাবলী সঠিকভাবে জানতে
হবে। ঘরে বসে যেকোনো ধরনের ঘরোয়া উপাদানে তৈরি করা ঔষধ থেকে উপকৃত হওয়ার জন্য
ব্যবহারবিধি সম্পর্কে জানা অত্যন্ত জরুরি। কেননা ব্যবহারবিধি সম্পর্কে জানা না
থাকার কারণে অনেক সময় হিতে বিপরীত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
এজন্য যেকোনো ধরনের ভেষজ উদ্ভিদ খাওয়া বাবা ব্যবহারের পূর্বে অবশ্যই ভালোভাবে
নিয়মাবলী জেনে নিবেন এবং পরিমান সম্পর্কে পূর্ণ ধারণা থাকতে হবে। পরিমাণের থেকে
অতিরিক্ত কোন কিছুই ভালো নয় বরংচ ক্ষতির কারণ হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। অড়হর
গাছের পাতা কোন রোগের জন্য কিভাবে ব্যবহার করবেন বা খাবেন তা নিম্নে বিস্তারিত
আলোচনা করা হলোঃ-
রোগ প্রতিরোধঃ অড়হড় ডাল আমাদের শুধু শরীরের সুস্থতায় জন্য উপকারী নয়।
বরঞ্চ মানব দেহের বিভিন্ন রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে। অড়হর ডালে রয়েছে
ইমিউনোমডুলেটরি উপাদান। এই উপাদানটি মানব দেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করতে
সহায়তা করে।
ওজন কমাতেঃ আমাদের শরীরের ওজন কমানোর জন্য অড়হর ডালের ভূমিকাও অতুলনীয়।
অন্যান্য ডালের মত ওর ডালে ওজন পুষ্টিগুণ রয়েছে। এছাড়া ওর ডালে রয়েছে প্রচুর
পরিমাণে ফাইবার। স্যার আপনার অবশ্যই জেনে থাকবেন যে ফাইবার সমৃদ্ধ খাবার খেলে।
দীর্ঘ সময় পেটের খাদ্য ধরে রাখতে সহায়তা করে। যার কারণে খাওয়ার প্রবণতা ও কমে
যায়। এভাবে অতিরিক্ত ওজন কমানোর জন্য ফাইবার যুক্ত অড়হর ডাল বিশেষ ভূমিকা পালন
করে।
ক্যান্সারঃ নিঃসন্দেহে ক্যান্সার একটি মরণব্যাধি রোগ। কিন্তু এর মরণব্যাধি
রোগ থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য অড়হর ডালের ব্যবহার বেশ উপকারী। ন্যাশনাল
ইনস্টিটিউট অফ নিউট্রিশন (হায়দ্রাবাদ) এর একটি গবেষণায় দেখা গিয়েছে যে অড়হর
ডালে রয়েছে অ্যন্টিঅক্সিডেন্ট। আর এই এন্টিঅক্সিডেন্ট উপাদান থাকার কারণে আমাদের
অ্যাক্সিডেটিভ স্ট্রেস এর কারণে হওয়া ক্যান্সারের ঝুঁকি থেকে রক্ষা করতে সহায়তা
করে। সেই গবেষণায় আরো দেখা গিয়েছে যে অড়হর গাছের মূলে থাকা এক ধরনের উপাদান
কেজোনল। আর এই কেজোনল উপাদান মরণব্যাধিক ক্যান্সার থেকে রক্ষা করতে সহায়তা করে।
হৃদরোগঃ আমাদের বিভিন্ন কারণে হৃদ রোগের সমস্যা দেখা দিতে পারে। তবে
অন্যতম একটি কারণ রয়েছে সেটি হল শরীরে ফ্রি রেডিকেলস এর প্রভাব। আর অড়হর ডাল এই
সমস্ত সমস্যা এরাতে অনেক বেশি কার্যকরী ভূমিকা পালন করে।
জন্ডিসঃ জন্ডিস এমন একটি রোগ যা যা ধীরে ধীরে মানুষের লিভার নষ্ট করে
দেয়। এবং লিভারের একবার জন্ডিস আক্রান্ত হয়ে গেলে সারানো অনেক মুশকিল হয়ে
যায়। তাই এই জন্ডিস সারানোর জন্য অড়হর গাছের পাতার রস দুই থেকে তিন চামচ এবং
সাথে লবন মিশিয়ে হালকা গরম করে নিয়মিত খাওয়ার ফলে। জন্ডিস রোগ থেকে দ্রুত
মুক্তি পাওয়া যায়।
অশ্বরোগঃ অশ্বরোগ এমন একটি যন্ত্রণাদায়ক। এই রোগ যার হয়েছে সে ব্যতীত
অন্য কেউ এর যন্ত্রণা সম্পর্কে বুঝতে পারবে না। অশ্ব রোগে আক্রান্ত রোগী অড়হর
গাছের পাতার রস হালকা গরম করে সকালে এবং সন্ধ্যায় নিয়মিত খেলে দ্রুত অশ্বরোগ
থেকে আরোগ্য লাভ করা যায়। আবার অড়হর ডাল এর সাথে ভেজে ফেলে অনেক বেশি উপকার
পাওয়া যায়।
মুখের অরুচিঃ অনেক মানুষ রয়েছে যাদের খাওয়ার রুচি কম। তারা মুখে রুচি
ফিরিয়ে আনার জন্য অড়হর ডালের বিচি বা ডালের জুস তৈরি করে হালকা করে আদা এবং মরিচ
এবং সামান্য লবন দিয়ে এক থেকে দেড় কাপ নিয়মিত খেতে পারলে দ্রুত মুখের রুচি
ফিরে আসবে।
জিহব্বার ক্ষতঃ মানুষের মুখের ভিতরে বা মারিতে অনেক সময় দেখা যায় ক্ষত
হয়ে যায়। এ কতদূর করতে অনেক সময় লেগে যায়। অড়হর গাছের কচি পাতা ভালোভাবে
পরিষ্কার করে চিবিয়ে খেলে দ্রুত জিব্বার ক্ষত ভালো হয়ে যায়।
কাশি নিরাময়ঃ শীতের দিনে দেখা যায় অনেকের অল্পতেই ঠান্ডা লেগে কাশি শুরু
হয়ে যায়। এই কাশি দূর করার জন্য অড়হর গাছের পাতার রস ৭/৮ চামচ হালকা গরম করে
মধুর সাথে মিশিয়ে নিয়মিত খেলে দ্রুত কাশি ভালো হয়ে যায়।
চুলকানিঃ চুলকানি একটি ছোঁয়াচে রোগ এ রোগের আক্রান্ত রোগীদের অনেক সমস্যা
দেখা দেয়। এ রোগ দূর করার জন্য অড়হর গাছের পাতা আগুনে পুড়িয়ে ছাই করে টক দই এর
সাথে মিশিয়ে শরীরে লাগালে চুলকানি ভালো হয়ে যায়।
দাঁতের ব্যথাঃ দাঁতের ব্যথা এমন একটি রোগ যা একবার কারো হয় একমাত্র সেই
বুঝতে পারে দাঁতের ব্যথার কি যন্ত্রনা। এই দাঁতের ব্যাথা দূর করার জন্য অড়হর
গাছের পাতার সিদ্ধ করে পানি দিয়ে কুলি করলে দাঁতের ব্যথা দ্রুত দূর হয়ে যায়।
চোখের ছানিঃ চোখের ছানি পড়া আমার আর তোকে একটি রোগ কেননা এই রোগের
মাধ্যমে চোখ নষ্ট হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে। চোখের ছানি দূর করার জন্য হরহর
গাছের শিকড় থেতিয়ে দিয়ে। চোখের মধ্যে প্রলেপ দিলে ছানি রোগ দূর হয়ে যায়।
মাথা ব্যথাঃ অতিরিক্ত মাথাব্যথার জন্য অড়হর গাছের পাতা এবং দুর্বা ঘাস
একসাথে রস করে নস্য নিলে দ্রুত মাথা ব্যথা কমে যায়।
ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণের জন্য অড়হর গাছের ব্যবহার
ডায়াবেটিস এমন একটি রোগ যা বর্তমান সময় প্রায় ৮০ থেকে ৮৫ শতাংশ মানুষ ডাইবেটিস
রোগের মধ্যে আক্রান্ত। বিশেষ করে যাদের বয়স ৪০ বছরের উপরে তারা খুবই আতঙ্কের
মধ্যে থাকেন না জানি কখন ডায়াবেটিস শুরু হয়ে যায়। কেননা এই ডাইবেটিস এখন কমন
একটি রোগ হয়ে গিয়েছে। ডায়াবেটিস নিয়ে বহু মানুষ বহু ধরনের রেপারেশনের মধ্যে
ভুগতেছে।
ডায়াবেটিসে আক্রান্ত রোগীদের প্রায় শোনা যায়। ব্লাড সুগারের জন্য প্রেসারের,
রোগ হৃদরোগ হাই প্রেসার রোগী আক্রান্ত হয়ে পড়ে। এছাড়াও বাত ব্যথা কিডনি রোগ
থ্রম্বোসিস, এমনকি হার্ডস্টোক এর মত মারাত্মক দুর্ঘটনাও ঘটতে পারে। ডায়াবেটিস
আক্রান্ত রোগী বিভিন্ন ধরনের কাজ করার ক্ষমতা কমে যায়। বিশেষজ্ঞদের মতে ব্লাড
সুগার নিয়ন্ত্রণে রাখতে না পারলে।
বিভিন্ন ধরনের মরণব্যধি রোগের মধ্যে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। ডায়াবেটিস
বা ব্লাড সুগার নিয়ন্ত্রণের জন্য দেশি-বিদেশে বিভিন্ন গবেষকগণ অক্লান্ত
পরিশ্রমের মাধ্যমে গবেষণা করে যাচ্ছেন। কিছু কিছু গবেষকগণ৷ ভেষজ উদ্ভিদের মাধ্যমে
ডায়াবেটিস ব্লাড সুগার নিয়ন্ত্রণের জন্য আবিষ্কার করছে সক্ষম হয়েছে। যে একবার
ডায়বেটিস রোগে আক্রান্ত হয় তার আর কোন নিস্তার নেই।
তবে এই রোগ নিয়ন্ত্রণের জন্য কিছু উপকরণ রয়েছে। কোন ব্যক্তি যদি নিয়মিত অড়হর
ডাল সিদ্ধ করে খেতে পারে তাহলে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণের থাকবে। অথবা অড়হর গাছের
মূল থেকে ৮ থেকে ১০ গ্রাম সিদ্ধ করে আধা কাপ করে সেবন করে তাহলে ব্লাড সুগার এবং
ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে থাকবে।
অড়হর ডালের ক্ষতিকর দিক
অড়হর গাছের উপকারিতা যেমন রয়েছে ঠিক তেমনি আবার এই ডালের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া
রয়েছে। অড়হর ডালের মধ্যে প্রচুর পরিমাণে প্রোটিন রয়েছে। খুব বেশি অড়হর ডাল খেলে
বদহজমের সমস্যা হতে পারে। ফলে সবার জন্য এই ডাল খাওয়ার সুবিধা জনক নয়। চলুন অড়হর
ডালের কিছু ক্ষতিকর দিক সম্পর্কে জেনে নেই।
হজমের সমস্যাঃ পরহর ডাল অধিক পরিমাণে খাওয়ার ফলে। শেষ করে রাত্রেবেলা
খেলে নানা ধরনের সমস্যা তৈরি হতে পারে। আমরা যেহেতু জানি ডালের মধ্যে প্রচুর
পরিমাণে ফাইবার উপাদান রয়েছে। আর এই ফাইবার পেটের খাদ্য দেরিতে হজম করে। আর
ফাইবার পেটে বেশিক্ষণ থাকার কারণে গ্যাস এবং এসিডিটির সমস্যা হতে পারে। তাই বদ
হজম এড়াতে রাতের বেলা খাওয়া থেকে বিরত থাকা উত্তম। যারা অতিরিক্ত ডাল খেতে পছন্দ
করেন তারা অড়হর ডাল অল্প পরিমাণে খাওয়ার চেষ্টা করবেন। তা না হলে বদহজমের
সমস্যায় ভুগতে পারেন।
ইউরিক অ্যাসিডঃ সাধারণত আমরা জানি ডাল খেলে ইউরিক এসিডের মাত্রা বাড়ে না।
কিন্তু কিডনি রোগে আক্রান্ত ব্যক্তিদের ডাল খাওয়ার সময় অবশ্যই সতর্কতা অবলম্বন
করতে হবে। বিশেষ করে যাদের পিউরিন টলারেন্স এর সমস্যা আছে। তাদের এ বিষয়ে একটু
ভেবে চিনতে খেতে হবে। কেননা ডালে উপস্থিত একটি যৌগ হলো পিউরিন।
বেশি ডাল খেলে পরে তাদের মধ্যে মেটাবোলাইজড ইউরিক এসিডের মাত্রা বেড়ে যাওয়ার
সম্ভাবনা থাকে। যার কারণে স্বাস্থ্য সংক্রান্ত সমস্যা বেড়ে যেতে পারে। এক
গবেষণায় দেখা গিয়েছে যে ইউরিক অ্যাসিড ক্রিস্টাল কিডনিতে পাথর তৈরি করতে
সহায়তা করে। যার কারণে চরম ব্যথা অনুভব হয়। অতএব কিডনি রোগে আক্রান্ত ব্যক্তি
অড়হর ডাল খাওয়া থেকে বিরত থাকা উত্তম।
হাইপারক্যালেমিয়াঃ ডালের মধ্যে প্রচুর পরিমানে পটাশিয়াম থাকে। আর বেশি
পরিমাণে পটাশিয়ামযুক্ত খাবার খাওয়ার ফলে হাইপারক্যালেমিয়া হতে পারে। অতিরিক্ত
পরিমাণে হাইপার ক্যালিমিয়া হলে গুরুতর বিপদজনক কার্ডিয়াক বা পেশী দুর্বলতা হতে
পারে। হাইপারক্যালেমিয়া হওয়ার লক্ষণ সমূহ হলো বমি, ক্লান্তি, অনিয়মিত
শ্বাসকষ্ট, দেখা দিতে পারে। যার কারণে কিডনি রোগে আক্রান্ত ব্যক্তি অড়হর ডাল
খাওয়া থেকে বিরত থাকা উচিৎ।
পাইলসঃ পাইলস রোগে আক্রান্ত ব্যক্তিরা অড়হর ডাল বেশি খেলে মারাত্মক ধরনের
সমস্যা দেখা দিতে পারে। কেননা উচ্চ প্রোটিন উপাদান যুক্ত অড়হর ডাল খাওয়ার ফলে
হজম কম হয়। এবং কোষ্ঠকাঠিন্য দেখা দিতে পারে। আর এই সমস্ত সমস্যা পাইলসের
রোগীদের জন্য অনেক ক্ষতিকর। তাই পাইলস রোগে আক্রান্ত রোগীরা অড়হর ডাল খাওয়া থেকে
বিরত থাকা উচিত।
লেখকের শেষ কথা
অড়হর গাছের উপকারিতা সম্পর্কে আজকের আর্টিকেলে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে। আরো
আলোচনা করা হয়েছে, অড়হর গাছের ঔষধি গুনাগুন সম্পর্কে। তবে একটা জিনিস অবশ্যই
মাথায় রাখতে হবে। উপরোক্ত ঔষধি গুনাগুন গুলো শুধুমাত্র রোগসমূহের উপসর্গ হতে
পারে চিকিৎসা নয়। কেননা যে কোন রোগের চিকিৎসার জন্য অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ
নেওয়া উচিত।
আজকে আর্টিকেল পরে যদি আপনার উপকৃত হয়ে থাকেন তাহলে নিয়মিত আমাদের ওয়েবসাইট
ভিজিট করুন। কারণ আমাদের ওয়েবসাইটে নিয়মিত নতুন নতুন আর্টিকেল পোস্ট করা হয়।
আমাদের আর্টিকেল পড়ে উপকৃত হয়ে থাকলে অবশ্যই আপনার বন্ধুদের সাথে শেয়ার করবেন।
সময় নিয়ে সাথে থাকার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ।
এস এম ট্রপিক্স এর নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url