কলার মোচা খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা এবং ঔষধি গুনাগুন
কলার মোচা খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে জানতে চাচ্ছেন? কলার মোচা খেলে
কি হয় চলুন আজকের আর্টিকেলে কলার মোচা খাওয়ার উপকারিতা এবং গর্ভাবস্থায় কলার
মোচা খেলে কি হয় সে সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নেই।
কলার মোচার মধ্যে রয়েছে বিভিন্ন ধরনের পুষ্টিগুণ উপাদান ও ঔষধি গুনাগুন। কলার
মোচা খাওয়ার মাধ্যমে শরীরের বিভিন্ন রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়। চলুন কলার
মোচা খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নেই।
পোস্ট সূচীপত্রঃ কলার মোচা খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা এবং ঔষধি গুনাগুন
কলার মোচা সম্পর্কে কিছু তথ্য
গ্রামাঞ্চলের মানুষের কাছে কলার মোচা যেমন পরিচিত এবং জনপ্রিয় ঠিক তেমনি শহরের
মানুষের কাছে কলার মোচা অনেকটাই অপরিচিত। গ্রাম অঞ্চলের মানুষের অত্যন্ত জনপ্রিয়
একটি খাদ্য কলার মোচা। গ্রামাঞ্চলের মানুষ কলার মোচা খুব একটা কিনে খায় না।
কেননা গ্রাম অঞ্চলের মানুষের বাড়ির আশেপাশে প্রায় আঠিয়া কলার গাছ লাগায়। আর
সেই কলা গাছের কলার মোচা তারা বিভিন্নভাবে খেয়ে থাকেন।
তবে শহরাঞ্চলের মানুষেরা এটি বাজার থেকে ক্রয় করে খেয়ে থাকেন। শহরাঞ্চলের
বিভিন্ন বাজারে কলার মোচা বিক্রি করা হয়। কলার মোচ বিভিন্নভাবে খাওয়া যায়।
তরকারি রান্না করে খাওয়া যায়, ভাজি করে খাওয়া যায়, বড়া বানিয়ে খাওয়া যায়,
এছাড়াও গ্রাম অঞ্চলের মানুষ বিভিন্নভাবে কলার মোচা খেয়ে থাকেন। বর্তমান
আধুনিকতার ছোঁয়ায় ধীরে ধীরে এই সমস্ত সবজি বিলুপ্তের দিকে। বর্তমান প্রজন্মের
অনেকেই খোলার মোচা যে খাওয়া যায় এ সম্পর্কে জানেনা।
অথচ আগেকার মানুষের অত্যন্ত জনপ্রিয় একটি খাদ্য ছিল কলার মোচা। আমরা ছোটবেলায়
দেখেছি খোলার মোচা রান্না করলে পুরো ফ্যামিলিতে কেমন যেন আনুষ্ঠানিকতার ভাব দেখা
যেত। বর্তমান সময়ে এই কলার মোচা খাবার তেমন একটা প্রচলন দেখা যায় না। এ কলার
মোচার মধ্যে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে পুষ্টিগুণ উপাদান এবং ঔষধি গুনাগুন। চলুন কলার
মোচা খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে জেনে নেই।
কলার মোচা খাওয়ার উপকারিতা
কলার মোচা খাওয়ার উপকারিতা অতুলনীয়। যা কয়েক লাইনে লিখে শেষ করা সম্ভব না।
কলার মোচা খেতে অনেক সুস্বাদ এবং এতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে পুষ্টিগুন উপাদান এবং
ঔষধি গুনাগুন। কলার মধ্যে যে সমস্ত পুষ্টিগুণ উপাদান রয়েছে কলার মোচায় ও সেই
সমস্ত পুষ্টিগুণ রয়েছে। বিশেষজ্ঞ গনের মতে কলার মোচায় রয়েছে প্রচুর পরিমাণে
ফাইবার। যা মানব দেহের রক্তের হিমোগ্লোবিনের মাত্রা বাড়াতে সাহায্য করে।
তাই নিয়মিত মোচা খেলে রক্তের সুগার কমিয়ে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ করে এবং
রক্তশূন্যতা দূর করতে সাহায্য করে। এছাড়াও উচ্চ রক্তচাপ দৃষ্টিশক্তিহীনতা
ক্যান্সার ও হৃদরোগ সহ বিভিন্ন রোগের মহা ওষুধ হিসেবে কাজ করে। এছাড়াও কলার
মোচায় রয়েছে ভিটামিন এ, ভিটামিন বি৬ সহ ক্যালসিয়াম, পটাশিয়াম সহ আরো অন্যান্য
পুষ্টিগুণ উপাদান সমূহ। চলুন এক নজরে কলার মোচা খাওয়ার উপকারিতা গুলো জেনে নেই।
- রক্তের হিমোগ্লোবিনের মাত্রা বৃদ্ধি করে।
- রাতকানা রোগ দূর করতে সাহায্য করে।
- ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ করে।
- ক্যান্সার ও হৃদরোগ থেকে রক্ষা করে।
- পিরিয়ড স্বাভাবিক নিয়ন্ত্রণে রাখে।
- বয়সের ছাপ দূর করে।
- শরীরের ওজন কমাতে সহায়তা করে।
- গর্ভবতী মায়েদের বুকের দুধ বৃদ্ধি করে।
- আলসার থেকে মুক্তি দেয়।
- ত্বকের ব্রণ ও কালচে দাগ দূর করে।
- শরীরে এনার্জি যোগায়।
- শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে।
কলার মোচার ঔষুধি গুনাগুন সমূহ
কলার মোচায় রয়েছে হাজারো ঔষধি গুনাগুন। বিভিন্ন রোগ থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য
করার মোচা অত্যন্ত কার্যকরী ভূমিকা পালন করে। কলার মোচায় থাকা ভিটামিন এ আমাদের
দৃষ্টিশক্তি বৃদ্ধি করে এবং চোখের যাবতীয় সমস্যা দূর করতে সহায়তা করে। এছাড়াও
কলার মোচায় বিভিন্ন ধরনের খনিস উপাদান পাওয়া যায়।
যে সমস্ত উপাদান মানবদেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে তোলে এবং বিভিন্ন রোগ
থেকে মুক্তি দেয়। তাই কলার মোচা নিয়মিত খাদ্য তালিকায় রাখলে অত্যন্ত উপকার
পাওয়া যায়। বিশেষ করে গর্ভবতী নারীদের জন্য কলার মোচা অনেক উপকারী। চলুন কলার
মোচা খেলে যে সমস্ত রোগ থেকে উপশম পাওয়া যায় তা বিস্তারিতভাবে জেনে নেই।
- হিমোগ্লোবিনঃ হিমোগ্লোবিন হল মানবদেহের রক্তের একটি মূল উপাদান, কলার মোচা মানুষের শরীরের রক্তের হিমোগ্লোবিন বৃদ্ধি করতে সহায়তা করে। এছাড়াও শরীরের রক্তের মাত্রা ঠিক রাখার জন্য বা রক্তশূন্যতা দূর করার জন্য কলার মোচা অত্যন্ত কার্যকরী ভূমিকা পালন করে।
- রাতকানা রোগঃ বর্তমান সময়ে বেশিরভাগ মানুষ চোখের সমস্যায় ভুগে। বিশেষ করে দেখা যায় ছোট ছোট বাচ্চারাও পাওয়ার লেন্স লাগানো চশমা পড়ে যার মূল কারণ হলো অধিক পরিমাণে ফোন চালানো। কলার মোচায় থাকা ভিটামিন এ চোখের এ ধরনের সমস্যা দূর করতে সহায়তা করে। এবং রাতকানা রোগ দূর করতে অত্যন্ত উপকারী।
- ডায়াবেটিসঃ ডায়াবেটিস বর্তমানে কমন একটি রোগ। বাংলাদেশের প্রায় ৬০% মানুষ ডায়াবেটিস রোগে আক্রান্ত। ডায়াবেটিস রোগে আক্রান্ত রোগীদের জন্য কলার মোচা হতে পারে অত্যন্ত উপকারী একটি সবজি। কেননা কলার মোচায় রয়েছে ফেনোলিক অ্যাসিড ও বায়োঅ্যাক্টিভ উপাদান যা রক্তের শর্করা নিয়ন্ত্রণ করতে সহায়তা করে। আর রক্তের শর্করা নিয়ন্ত্রণে থাকলে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে থাকে।
- ক্যান্সার ও হৃদরোগঃ কলার মোচা শরীরের কঠিনতম রোগ প্রতিরোধ করে। খোলার মোচার মধ্যে থাকা ফেনোলিক অ্যাসিড ফ্লেভানয়েড সহ বিভিন্ন ধরনের অ্যান্টি-অ্যাক্সিডেন্ট উপাদান শরীরের বিভিন্ন ধরনের ব্যাকটেরিয়া ধ্বংস করে এবং ক্যান্সার ও হৃদরোগ প্রতিরোধে সহায়তা করে।
- পিরিয়ডঃ অনেক মহিলা এমন রয়েছে যারা দীর্ঘদিন থেকে পিরিয়ড সমস্যায় ভুগতেছেন। নিয়মিত পিরিয়ড হয় না। পিরিয়ড নিয়মিত রাখার জন্য কলার মোচা খেতে পারেন। কলার মোচার মধ্যে থাকা বিভিন্ন পুষ্টিগুণ উপাদান অনিয়মিত পিরিয়ড হলে নিয়মিত করে তোলে। এবং পিরিয়ডের সময় পেটের ব্যথা থাকলে তা দূর করতে সাহায্য করে।
- বয়সের ছাপঃ অল্প বয়সে চেহারার মধ্যে বয়স্ক ভাব চলে এসেছে? ত্বকের মধ্যে মেছতা দিয়ে ভরে গেছে? বিশেষ করে শীতের দিন শুষ্ক আবহাওয়া হওয়ার কারণে চেহারা কেমন যেন বয়স্ক মনে হয়। এ ধরনের সমস্যা দূর করতে কলার মোচা নিয়মিত খেতে পারেন। কলার মোচার মধ্যে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন বি৬ রয়েছে যা আপনার ত্বকের মধ্যে বয়স্ক ছাপ দূর করে।
- মুখের ব্রণ ও কালচে দাগঃ আমাদের এর মধ্যে অনেক সময় বিভিন্ন কারণে ব্রণ উঠে থাকে। এবং ব্রণ থেকে মুখের মধ্যে কালো দাগ পড়ে যায়। মুখের ব্রণ এবং কালচে দাগ দূর করতে নিয়মিত কলার মোচা খেতে পারেন। কেননা কলার মোচার মধ্যে রয়েছে ভিটামিন সি যা শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে এবং মুখের ব্রণ দূর করতে সহায়তা করে।
- কোষ্ঠকাঠিন্যঃ দীর্ঘদিন ধরে কোষ্ঠকাঠিন্য রোগে আক্রান্ত হয়ে থাকলে নিয়মিত কলার মোচা খাওয়ার অভ্যাস করুন। কলার মোচায় রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার যা কোষ্টকাঠিন্য দূর করতে সহায়তা করে। তাই কোষ্ঠকাঠিন্য থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য নিয়মিত খাদ্য তালিকায় কলার মোচা রাখতে পারেন।
- আলসার রোগঃ আপনারা এটা জেনে অবাক হবেন যে কলার মোচা আলসার এর মত কঠিন রোগ কে নিমিষেই দূর করে দেয়। কেননা কলার মোচাই রয়েছে বিভিন্ন ধরনের ভিটামিন ও পুষ্টিগুণ। যে সমস্ত ভিটামিন ও পুষ্টিগুণ শরীরের বিভিন্ন রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে। এবং আলসারের মতো কঠিন রোগকেও নিয়মিত কলার মজা খাওয়ার দ্বারা দূর করে দেয়।
- শরীরের শক্তিঃ আমাদের মধ্যে অনেকে এমন রয়েছেন যারা প্রচুর পরিমাণে পরিশ্রম করে থাকেন। অতিরিক্ত পরিশ্রমের কারণে শরীরে এনার্জি কমে যায় এনার্জি বৃদ্ধির জন্য কলার মোচা খেতে পারেন। কেননা করার মোচার মধ্যে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে কার্বোহাইড্রেট উপাদান। যা আপনার শরীরের ক্লান্তি দূর করে প্রচুর পরিমাণে এনার্জি যোগাবে। তাই শরীরের এনার্জি বৃদ্ধি করতে নিয়মিত কলার মোচা খাওয়া শুরু করুন।
- চুল পড়াঃ চুল পড়া বন্ধ করতে নিয়মিত কলার মোচা খাওয়ার অভ্যাস করুন। কেননা কলার মোচার মধ্যে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন এ খনিজ উপাদান যা চুলের গোড়াকে মজবুত এবং শক্তিশালী। তাই চুল পড়া বন্ধ করতে কলার মোচা নিয়মিত খাবার তালিকা রাখুন।
- রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাঃ শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কম থাকলে সহজেই যেকোনো রোগ এসে অ্যাটাক করতে পারি। তাই শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধির জন্য নিয়মিত খাদ্য তালিকায় কলার মোচা রাখুন। নিয়মিত কলার মোচা খেতে পারলে বিভিন্ন ধরনের রোগ থেকে মুক্তি পাওয়া যাবে।
কলার মোচার পুষ্টিগুন উপাদান সমূহ
কলার মোচা খেতে যেমন সুস্বাদু ঠিক তেমনি কলার মোচা খাওয়ার উপকারিতা রয়েছে অনেক।
রয়েছে প্রচুর পরিমাণে পুষ্টিগুণ উপাদান। যেসব উপাদান শরীরের বিভিন্ন রোগ
প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে এবং শরীরের বিভিন্ন ভিটামিনের ঘাটতি পূরণ করে। কলার
মোচার মধ্যে এমন কিছু প্রোটিন রয়েছে যা মানব দেহের জন্য অত্যন্ত কার্যকরী ভূমিকা
পালন করে। তাই আমাদের নিয়মিত কলার মোচা খাওয়ার অভ্যাস করা প্রয়োজন। চলুন এক
নজরে দেখে আসি কলার মোচার মধ্যে থাকা পুষ্টি কোন উপাদান গুলো।
পুষ্টিগুন উপাদান | পরিমাণ (প্রতি ১০০গ্রামে) |
---|---|
ভিটামিন এ, বি-৬, সি | ৪২০ মিলি গ্রাম |
ভিটামিন ই, প্রোটিন | ১.৭ গ্রাম |
ক্যালসিয়াম | ৩২ মিলিগ্রাম |
ফসফরাস | ৪২ মিলিগ্রাম |
লৌহ | ১.৬ মিলিগ্রাম |
ফ্যাট | ০. গ্রাম |
পটাশিয়াম | ১৮৫ মিলি গ্রাম |
কার্বোহাইড্রেট | ৫.১ গ্রাম |
রিবোফ্লেবিন | ০.০২ মিলিগ্রাম |
আঁশ | ১.গ্রাম |
থায়ামিন | ০.০৫ মিলিগ্রাম |
খোলার মোচা নিয়ে কিছু প্রশ্ন উত্তর
- প্রশ্নঃ কলার মোচা খেলে কি হয়?
- উত্তরঃ করার মোচায় যেহেতু ফাইবার এবং আয়রনসমৃদ্ধ উপাদান পাওয়া যায় তাই কলার মোচা খেলে শরীরের রক্তের শর্করা বৃদ্ধি করে এবং হিমোগ্লোবিনের মাত্রা বৃদ্ধি করে। এছাড়াও ডায়াবেটিস এবং শরীরের রক্তস্বল্পতা দূর করতে সহায়তা করে।
- প্রশ্নঃ কলার মোচায় কি এলার্জি আছে?
- উত্তরঃ মানুষের শরীরে বিভিন্নভাবে এলার্জি্র সমস্যা দেখা দেয়। বিভিন্ন জনের বিভিন্ন খাবারের মধ্যে এলার্জি থাকে। তাই কলার মোচার মধ্যেও কিছু কিছু মানুষের এলার্জি দেখা দিতে পারে। যাদের এলার্জি রয়েছে তারা কলার মোচা খাওয়ার আগে ডাক্তারের পরামর্শ নিবেন।
- প্রশ্নঃ কলার মোচা কি খাওয়া ভালো?
- উত্তরঃ কলার মোচায় যেহেতু প্রচুর পরিমাণে পুষ্টি কোন উপাদান এবং ওষুধ গুনাগুন রয়েছে সেক্ষেত্রে কলার মোচা নিয়ম মেনে খেতে পারলে অনেক উপকার পাওয়া যায়। তাই কলার মোচা নিয়ম মেনে খাওয়া অবশ্যই ভালো।
- প্রশ্নঃ গর্ভাবস্থায় কলার মজা খাওয়া যাবে কি?
- উত্তরঃ গর্ভাবস্থায় মহিলাদের শরীর যেহেতু দুর্বল থাকে সেক্ষেত্রে খোলার মোচা খাওয়া অনেক উপকারী। কেননা কলার মোচা খাবার দ্বারা শরীরের দুর্বলতা দূর করে এবং শরীরের মধ্যে এনার্জি নিয়ে আসে।
গর্ভাবস্থায় কলার মোচা খেলে কি হয়
গর্ভাবস্থায় কলার মোচা খেলে কি হয় এই নিয়ে অনেক গর্ভবতী মায়েরা চিন্তায়
থাকেন। চিন্তা করে যে গর্ভাবস্থায় কলার মোচা খাওয়া যাবে কিনা। বা গর্ভাবস্থায়
কলার মোচা খেলে সন্তানের কোন ক্ষতি হবে কিনা। এ ধরনের নানান প্রশ্ন মাথায় ঘুরপাক
করে। আসলে গর্ভাবস্থায় যেহেতু বিভিন্ন খাবার থেকে বিরত থাকতে হয় কেননা এমন কিছু
খাবার রয়েছে যা গর্ভবতী মায়ের এবং গর্ভস্থ সন্তানের ক্ষতি করতে পারে।
তাইতো সব গর্ভবতী মায়েরা গর্ভাবস্থায় যেকোনো খাদ্য খাওয়ার পূর্বে অনেক চিন্তা
ভাবনা করে। তবে গর্ভাবস্থায় কলার মোচা গর্ভবতী মায়ের অথবা গর্ভস্থ সন্তানের
তেমন কোনো ক্ষতি করে না বরং গর্ভাবস্থায় কলার মোচা খেলে মা এবং সন্তান উভয়ের
অনেক উপকার রয়েছে। গর্ভাবস্থায় মহিলাদের রক্তের শূন্যতা দেখা যায়। তবে নিয়মিত
কলার মোচা খেলে রক্তশূন্যতা দূর করবে।
এছাড়াও গর্ভাবস্থায় কলার মোচা খাবার দ্বারা গর্ভস্থ সন্তানের পেশি এবং হাড়
মজবুত করে এবং গর্ভস্থ সন্তানের গায়ের রং ফর্সা করতে সহায়তা করে। গর্ভস্থ
সন্তানের মস্তিষ্ক প্রায় ৭০% গর্ভস্থ থাকা অবস্থায় বৃদ্ধি পায়। তাই
গর্ভাবস্থায় নিয়মিত কলার মোচা খেলে সন্তানের মস্তিষ্ক বৃদ্ধি পায়।
এছাড়াও গর্ভাবস্থায় কলার মোচা খেলে গর্ভবতী মহিলাদের শরীরের দুর্বলতা দূর করে
এবং শরীরে এনার্জি নিয়ে আসে। তাই গর্ভাবস্থায় নিয়মিত কলার মোচা নিয়ম মেনে
খেতে পারলে গর্ভবতী মা এবং গর্ভস্থ সন্তান উভয়ের জন্য অনেক বেশি উপকার হবে। সাথে
বিভিন্ন ধরনের রোগ থেকে হেফাজত থাকবে।
কলার মোচা খাওয়ার ক্ষতিকর দিক
উপরে এতক্ষণ পর্যন্ত আমরা কলার মোচা খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে
পেরেছি। এখন আমরা জানবো কলার মোচা খাওয়ার অপকারিতা বা ক্ষতিকর দিক সম্পর্কে।
প্রতিটা জিনিসেরই যেমন উপকারিতা রয়েছে ঠিক তেমনি পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া রয়েছে।
বিশেষ করে ভেষজ উপাদান দিয়ে উপকৃত হওয়ার পূর্বে অবশ্যই পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া বা
ক্ষতিকর দিক সম্পর্কে আমাদের ভালোভাবে জানা উচিত। তা না হলে উপকারের থেকে বেশি
ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। চলুন জেনে নেই কলার মোচা খাওয়ার অপকারিতা বা
ক্ষতিকর দিক সম্পর্কে।
- কলার মোচায় যেহেতু প্রচুর পরিমাণে ফাইবার এবং প্রোটিন থাকে তাই অতিরিক্ত কলার মোচা খাওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে। কেননা অতিরিক্ত কলার মোচা খেলে পেট ব্যথা বা গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা দেখা দিতে পারে। এছাড়াও অতিরিক্ত কলার মোচা খেলে কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা হতে পারে। তাই অতিরিক্ত কলার মোচা খাওয়া থেকে বিরত থাকতে থাকুন।
- যে সমস্ত মানুষের এলার্জি সমস্যা রয়েছে তারা কলার মোচা খাওয়ার পূর্বে অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ নেবেন। কেননা কলার মোচার মধ্যে থাকা ফেনোলিক অ্যাসিড এলার্জি জনিত সমস্যাগুলো বৃদ্ধি করতে পারে।
- গর্ভাবস্থায় কলার মোচা অতিরিক্ত খাওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে কেননা গর্ভাবস্থায় কোন খাবার কম বেশি হলে বাচ্চা এবং মা উভয়ে ক্ষতির সম্মুখীন হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। অতএব গর্ভাবস্থায় কলার মোচা খাওয়ার পূর্বে অবশ্যই গাইনি বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে তারপরে নিয়ম মেনে কলার মোচা খাওয়ার উত্তম।
লেখকের শেষ কথা
কলার মোচা খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে আজকে আর্টিকেলে বিস্তারিতভাবে
আলোচনা করা হয়েছে। আরো আলোচনা করা হয়েছে গর্ভাবস্থায় কলার মোচা খেলে কি হয়।
এছাড়াও কলার মোচার পুষ্টিগুণ উপাদান এবং ঔষধি গুণাগুণ সম্পর্কেও বিস্তারিতভাবে
আলোচনা করা হয়েছে। অতএব কলার মোচা খাওয়ার পূর্বে অবশ্যই নিয়ম মেনে খাবেন তাহলে
অবশ্যই উপকৃত হবেন।
আজকে আর্টিকেল পড়ে যদি আপনাদের ভালো লেগে থাকে তাহলে নিয়মিত আমাদের ওয়েবসাইট
ভিজিট করুন। কেননা আমরা নিয়মিত আমাদের ওয়েবসাইটে এই ধরনের আর্টিকেল লিখে থাকি।
আর যদি আমাদের আর্টিকেল পরে উপকৃত হয়ে থাকেন তাহলে বন্ধুদের সাথে শেয়ার করুন।
সময় দিয়ে সাথে থাকার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ।
এস এম ট্রপিক্স এর নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url